সম্প্রতি আমি বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি তে Adjunct Faculty হিসেবে যোগ দিয়েছি, Faculty of Earth and Ocean Science এর অধীনে। এই ভূমিকার অংশ হিসেবে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ধারাবাহিক কিছু ক্লাস নেওয়া শুরু করেছি।

এর প্রথম লেকচারটি হয়েছিল ২ নভেম্বর, শিরোনাম ছিল “The Digital Revolution Meets the Ocean”। প্রায় দুই ঘণ্টার এই সেশনে আমি চেষ্টা করেছি দেখাতে, কীভাবে প্রযুক্তি আর সমুদ্র একসাথে নতুন ভবিষ্যতের পথ তৈরি করছে।

সেশনের প্রথম অংশে ছিল “এআই বিপ্লব, অর্থাৎ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে শুরু হলো, কীভাবে ধাপে ধাপে আজকের অবস্থানে পৌঁছেছে। এই অংশটি আমি এখন প্রকাশ করেছি আমার YouTube চ্যানেলে (Digital Deep Dive)। নিচে সেই অংশের মূল সারসংক্ষেপ বা “key takeaways” শেয়ার করছি।

১. এআই আসলে কীভাবে শুরু হলো

এআই কোনো একদিনে তৈরি হয়নি। ১৯৫০-এর দশকে গণিতবিদ অ্যালান টিউরিং এক প্রশ্ন করেছিলেন, “যন্ত্র কি চিন্তা করতে পারে?” এই প্রশ্ন থেকেই শুরু। কয়েক দশক গবেষণার পরও তখন কাজ এগোয়নি, কারণ কম্পিউটার ছিল ধীর, ডেটা ছিল কম, আর অ্যালগরিদম যথেষ্ট উন্নত ছিল না।

২. তিনটি বিষয় বদলে দিল সবকিছু

প্রথমত, computing power, আজকের স্মার্টফোনই ৩০ বছর আগের সুপারকম্পিউটারের চেয়ে বেশি শক্তিশালী।

দ্বিতীয়ত, data explosion, এখন প্রতিটি সেন্সর, ফোন, ভিডিও, ছবি থেকে ডেটা তৈরি হচ্ছে।

তৃতীয়ত, smart algorithms, “deep learning” নামের নতুন প্রযুক্তি মেশিনকে শেখায় মানুষের মতো করে চিন্তা করতে।

এই তিনের সমন্বয়েই আজকের এআই বিপ্লব।

৩. বাস্তব জীবনে এআই

স্বাস্থ্যখাতে এআই এক্স, রে দেখে ক্যান্সার শনাক্ত করছে।
ব্যাংকে জালিয়াতি ধরা পড়ছে মিলিসেকেন্ডে।
পরিবহনে গুগল ম্যাপ বা টেসলার গাড়ি এআই ছাড়া ভাবা যায় না।
শিক্ষা, খুচরা বাণিজ্য, বিনোদন, সব ক্ষেত্রেই এআই বদলে দিচ্ছে কাজের ধারা।

৪. এবার সমুদ্রের পালা

আমরা পৃথিবীর সমুদ্র সম্পর্কে এত কম জানি যে বলা হয়, আমরা মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ সম্পর্কে বেশি জানি! কিন্তু এখন স্যাটেলাইট, সেন্সর, আন্ডারওয়াটার ড্রোন, ক্যামেরা, সব মিলিয়ে তৈরি হচ্ছে এক বিশাল “data ocean”।

এআই সেই ডেটা পড়ছে, বুঝছে, এবং বিশ্লেষণ করছে। এভাবেই সমুদ্র হচ্ছে পৃথিবীর শেষ বড় ডেটা চ্যালেঞ্জ, আর AI হচ্ছে সেই চাবিকাঠি।

৫. এআই ইতিমধ্যেই সমুদ্র জীবনে

আবহাওয়া অ্যাপ যখন বৃষ্টি হবে জানায়, সেটা এআই।
জাহাজ যখন বন্দরের রুট ঠিক করে, সেটাও এআই।
মাছধরার অ্যাপ এখন বলে দেয়, কোন জায়গায় বেশি মাছ পাওয়া যেতে পারে।

৬. বাংলাদেশের সুযোগ

বাংলাদেশের রয়েছে বঙ্গোপসাগর, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ উপসাগর। সরকার ইতিমধ্যেই “Blue Economy”–কে অগ্রাধিকার দিয়েছে। কিন্তু সফল হতে হলে প্রয়োজন এমন মানুষ, যারা সমুদ্র ও প্রযুক্তি, দুই’ই বোঝে।

এখানেই বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা আলাদা। তাদের হাতে এখন সুযোগ: Blue Economy’র ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার।

এই লেকচারের পরের অংশে আমি দেখিয়েছি কীভাবে এআই সমুদ্রবিদ্যা, হাইড্রোগ্রাফি, মেরিন ফিশারিজ এবং ক্লাইমেট সায়েন্সে বাস্তবভাবে কাজ করছে। সেই অংশ খুব শিগগিরই ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে ইনশা আল্লাহ।

Leave a comment

Trending